পদ্মায় ১০ মিনিটে তলিয়ে গেল ১৬ ঘর

পদ্মায় ১০ মিনিটে তলিয়ে গেল ১৬ ঘর

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পদ্মা নদীভাঙন শুরু হয়েছে। ১০ মিনিটের ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১৫০ মিটার এলাকা। হুমকির মুখে রয়েছে ইউনিয়নের দুটি গ্রামের শত শত পরিবার। যেকোনো সময় ধসে যেতে পারে বসতভিটা, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ দৌলতদিয়ার লঞ্চঘাট এলাকার মজিদ শেখের পাড়ায় ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা।

এ সময় ভাঙনের কারণে ১৬টি বসতবাড়ি ও ফসিল জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ ছাড়া হুমকিতে রয়েছে লঞ্চঘাটসহ ১ নম্বর ফেরিঘাট। হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে নদীপাড়ের মানুষ।

পদ্মা নদীর ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। নদীভাঙন রোধে দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ এবং পাউবোর অব্যবস্থাপনার কারণে ১০ মিনিটের ভাঙনে ১০-১৫টি বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। পদ্মাপারের আরও শত শত স্থাপনা হুমকির মধ্যে রয়েছে।

ভাঙনকবলিত এলাকার এক নারী বলেন, এখন পর্যন্ত ছয় থেকে সাতবার আমাদের বাড়িঘর নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। এরপর এই মজিদ শেখের পাড়ায় এসে বাড়ি করি। আজ ১০ মিনিটের ভাঙনে আবার বাড়ি নদীগর্ভে চলে যায়। এবার মাথা গোঁজার ঠাঁই আর রইল না।

পদ্মার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বিলাস ব্যাপারী বলেন, নদী ভাঙতে ভাঙতে আমাদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তারপরও সরকার কিছুই করছে না। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রতিও দাবি জানান তিনি।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে আমার এলাকার যে কয়েকটি বসটভিটা রয়েছে, সেটা আর টিকবে না। এখনই নদীভাঙন রোধ করা না গেলে আমার ইউনিয়নের এই মজিদ শেখের পাড়া আর থাকবে না। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজিজুল হক মামুন বলেন, হঠাৎ করে পদ্মায় নদীর লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে ১৬টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাঙনের কথা জানার পর প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হবে। পরবর্তীতে তাদের ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।

জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম  বলেন, ভাঙনের খবর শুনে আমি দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ভাঙনে যাদের ঘর বিলীন হয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা প্রদান করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন